সোমবার, আগস্ট ১৮, ২০২৫
৩ ভাদ্র ১৪৩২

আপনি পড়ছেন : সাংস্কৃতিক অঙ্গন

শুভজনের যুগপূর্তিতে পদক পেলেন সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম

শুভজনের যুগপূর্তিতে পদক পেলেন সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম


সরগম রিপোর্ট
2024-12-30
শুভজনের যুগপূর্তিতে পদক পেলেন সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম
শিল্পী খুরশীদ আলমের হাতে পদক তুলে দিচ্ছেন উদ্বোধক ও অন্যান্যরা

‘শুভজন পদক ২০২৩’ পেলেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম। শুদ্ধধারার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শুভজন এ পদকে ভূষিত করছে তাঁকে। খুরশীদ আলমকে পুরস্কার হিসেবে নগদ দশ হাজার টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড, শুভজন’র নির্দিষ্ট নকশার ব্রোঞ্জ ট্রফি এবং প্রশংসাপত্র দেওয়া হয়।
সংগঠনের ১৩ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় রাজধানীর পরিবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এক আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুভজন’র যুগপূর্তি উৎসবে তাঁর হাতে এ পদক তুলে দেওয়া হয় এবং একই সঙ্গে তাঁকে ‘শুভজন’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। অনুষ্ঠানে দেশের শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় অনন্য অবদান রাখায় আরও ছয়জন গুণীজনকে শুভজন সম্মাননা পুরস্কার দেয়া হয়। শুভজন সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- দেশের সংগীত বিষয়ক একমাত্র নিয়মিত পত্রিকা মাসিক সরগম সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও কবি ড. তৌহিদুল হক, বাংলাদেশ বেতার এবং টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত নজরুল সংগীতশিল্পী ও কবি শামীমা নাসরিন, কবি ও নাট্যকার আনতা নূর হক, বিশিষ্ট রূপ বিশেষজ্ঞ ও কবি ইসরাত মিতু এবং স্টামফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর সিনিয়র লেকচারার ও কবি মোকাররম চৌধুরী সিহাব এবং সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় সেরা সংগঠন পুরস্কার লাভ করেন শুভজন আশুগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুন নেওয়াজ রানা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে দেশের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এরপর মহান ভাষা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মত্যাগ করা বীর শহিদগণ এবং চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে একমিনিট নিরবতা পালন করা হয়। নিরবতা পালনের পরপরই মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বরেণ্য গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জী, অনুষ্ঠান উদ্বোধক বিশিষ্ট সাংবাদিক কাজী রওনাক হোসেন, পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম, অনুষ্ঠানের সভাপতি বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক এম আর মনজু, সম্মানিত অতিথি শুভজন উপদেষ্টা বিশিষ্ট প্রযুক্তিবিদ মোঃ শাহিদ উল মুনির এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কবি ও কথাশিল্পী ড. তৌহিদুল হক। শুভজন প্রতিষ্ঠাতা তরুণ রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শুভজন’র সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক নাসিরউদ্দিন শাহ। আলোচনা পর্বে অতিথিরা বলেন- যে দেশে গুণীজনদের কদর হয়না সেদেশে গুণীজন জন্মায় না। শুভজন সবসময়ই দেশের গুণীজনদের সম্মান জানিয়ে আসছে। একইসাথে বিভিন্নরকম সামাজিক, সেবামূলক ও মানবিক কর্মসূচির পাশাপাশি দেশের শিল্প-সাহিত্য এবং  সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশে অনবদ্য ভূমিকা রাখছে। শুভজন’র মতো এমন মহতী সংগঠনের একযুগ অতিক্রমে এ সংগঠনের সাথে যুক্ত সকলের প্রতি  আমাদের অভিনন্দন শুভেচ্ছা রইলো। আমরা প্রত্যাশা করি শুভজনের পথচলা যুগ পেরিয়ে শত বছর অতিক্রান্ত করুক।
আলোচনা পর্ব শেষে উপস্থিত গুণীজনদের হাতে শুভজন পদক ও সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শুভজনের সদস্য শিল্পীরা আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। শুরুতে দেশের গানের সাথে মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন সাদিকা মালিহা সখ, এসএম জাফিয়া জাহীন খান, নুসরাত ফারিয়া মেহবুবা, এবং জান্নাতুল ফেরদৌস হুমাশা। এরপর সংগীত পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী বারী দেওয়ান হৃদয়, শামীমা নাসরিন, শায়লা রহমান, তানজিম বিন তাজ প্রত্যয়, লিপি আকবর, আঁখি, ইমরান খান। সংগীত ও নৃত্যের ফাঁকে ফাঁকে আবৃত্তি করেন - আবৃত্তিশিল্পী সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, কবি নুরুন নেওয়াজ রানা, কবি শেখ নাসির, কবি আনতা নূর হক, রাদিতা জান্নাত রোজা। অনুষ্ঠানে যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন কীবোর্ডে দীপংকর, তবলায় শুভ্র, গীটারে সাম্য এবং দোতরায় সুমন শীল।
উল্লেখ্য, খুরশীদ আলম বাংলাদেশের সংগীত জগতের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি প্রায় পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। বেশিরভাগ গানই চলচ্চিত্রের। জনপ্রিয় হয়েছে অসংখ্য গান। ৫০ বছরের সংগীত জীবনে ৪২৫টির বেশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সালে তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে। এ ছাড়া অসংখ্য সন্মাননা, পুরস্কার এবং স্বর্ণপদক পেয়েছেন। ২০১৪ সালে প্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরী, ২০১৫ সালে সাংবাদিক কামাল লোহানী, ২০১৬ সালে কবি কাজী রোজী, ২০১৭ সালে অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, ২০১৮ সালে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুস্তাফা মনোয়ার, ২০১৯ সালে অভিনয়শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম, ২০২০ সালে সংগীতশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী, ২০২১ সালে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, ২০২২ সালে অভিনেতা ডা. এজাজুল ইসলাম শুভজন পদক গ্রহণ করেন। ‘মানবিক মানুষ চাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে দেশের সার্বিক উন্নয়নে সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পকলা বা সমাজ বিনির্মাণের বিভিন্ন শাখায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশি বা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিকদের প্রতি বছর ‘শুভজন পদক’ দেওয়া হয়। শুভজনের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় নির্বাহী পর্ষদের কার্যনির্বাহী সভাপতি তরুণ রাসেল বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি একবার ‘শুভজন পদক’ পেলে তাকে পরবর্তীতে পদকের জন্য বিবেচনা করা হয় না। প্রাথমিকভাবে মরণোত্তর পদক দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেই। বিগত ১০ বছর ধরে এ পদক দেওয়া হচ্ছে। য়